কাউখালী উপজেলাপরিচিতি
১) কাউখালী উপজেলার নামকরণঃ কাউখালী উপজেলার নামকরণের উৎপত্তি সুনিদিষ্ট ভাবে তেমন জানা না গেলেও সাধারণ মানুষের প্রচলিত বিশ্বাস এই যে, অতীতে এলাকার লোকজন অনেক স্থানে কুয়া বা গর্ত খনন করে সেই পানি খাবার ও অন্যান্য কাজে ব্যবহার করত। এ কুয়া বা গর্তের স্থানীয় নাম ‘কাউ’ শুষ্ক মৌসুমে ঐ কুয়া অনেক সময় পানি শূন্য হয়ে যেত যার স্থানীয় নাম ‘খালি’ । পরবর্তীতে উলেস্নখিত ‘কাউ’ এবং ‘খালি’এ দুটি শব্দের সমন্বয়ে অত্র উপজেলার নামকরণ হয় কাউখালী।
২) জনগোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্য ও জীবন যাত্রা সম্পর্কিত তথ্য ঃ কাউখালী উপজেলার জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৬০ শতাংশ পাহাড়ী ও ৪০ শতাংশ বাঙ্গালী ।
ক)) পাহাড়ী জনগোষ্ঠী : পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর মধ্যে চাকমা এবং মারমা(মগ) এ দুগোত্রই প্রধান। তাছাড়া কিছু সংখ্যক
ত্রিপুরা ও তনচংগ্যা জনগোষ্ঠীর বসবাস আছে।
খ) বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী : মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ বাঙ্গালীর মধ্যে ১০% বাঙ্গালী ষাটের দশকে কাপ্তাই হ্রদে বাঁধ দেয়ার ফলে রাঙ্গামাটি সদর এলাকার পুরানবসিত্ম ও ঝগড়াবিল মৌজা হতে উদ্বাসুত্ম হয়ে কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া, কাউখালী বাজার গুলোতে বাঙালীরা বসবাস করে ব্যবসা বাণিজ্য করত। অবশিষ্ট ৩০ শতাংশ বাঙ্গালী ১৯৭৯ সালে হাতিয়া, সন্দ্বীপ, ভোলা, নোয়াখালী , কুমিলস্না প্রভৃতি জেলা থেকে নদী ভাংগনের ফলে ও অন্যান্য কারণে উদ্বাসত্ম হয়ে মরহুম প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আমলে অত্র উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পুনর্বাসিত হয়। তারা স্থানীয়ভাবে সেটেলার হিসাবে পরিচিত।
৩) আয়তন : ৩৩৯.২৯ বর্গকিলোমিটার ।
ভূমির পরিমাণ- ২৮৬.৯০ বর্গকিলোমিটার,তন্মধ্যে-সংরক্ষিত বনভূমি-২৫.৬১৪ বর্গকিলোমিটার,
নদী- ২৬.৭৮ বর্গ কিলোমিটার।
৪) জেলা সদর হতে দূরত্ব : ৩৩ কিলোমিটার।
৫) প্রতিষ্ঠার সাল :কাউখালী উপজেলা ১৯৮২ সালের ১০ ডিসেম্বর, রাঙ্গামাটি জেলার তৃতীয় ÿুদ্রতম উপজেলা
হিসাবে আত্নপ্রকাশ করে।
৬) উপজেলার ভৌগোলিক অবস্থান :কাউখালী উপজেলাটি ভৌগোলিক দিক থেকে ২২ ডিগ্রী ২৯ মিনিট হতে ২২ ডিগ্রী ৪৪ মিনিট উত্তর অক্ষাংশে ৯১ ডিগ্রী ৫৬ মিনিট হতে ৯২ ডিগ্রী ৮০ মিনিট পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। চার ইউনিয়ন বিশিষ্ট কাউখালী উপজেলার পূর্বে রাঙ্গামাটি সদর ও কাপ্তাই , পশ্চিমে- ফটিকছড়ি ও রাউজান, উত্তরে- নানিয়ারচর ও লক্ষীছড়ি, দক্ষিণে- রাঙ্গুনীয়া ও রাউজান উপজেলা।
৭) অন্যান্য তথ্যাবলীঃ
ক) ইউনিয়ন : ০৪ (চার) টি ইউনিয়নের নাম-১. বেতবুনিয়া ২. ফটিকছড়ি ৩. ঘাগড়া ৪. কলমপতি।
খ) মৌজার সংখ্যা : ১০ (দশ) টি মৌজার নাম- ১) ৮৬নং ফটিকছড়ি মৌজা (২) ৮৭ নং ডাবুয়া মৌজা (৩) ৯৪নং নাভাঙ্গা মৌজা (৪) ৯৫নং কাঁশখালী মৌজা (৫) ৯৫(ক) নং বেতবুনিয়া মৌজা (৬) ৯৬ নং কলমপতি মৌজা,(৭) ৯৭নং মুবাছড়ি মৌজা (৮) ৯৮ নং কচুখালী মৌজা (৯) ৯৯ নং ঘাগড়া মৌজা (১০) ১০১ নং ঘিলাছড়ি মৌজা।
গ) গ্রাম ও পাড়ার সংখ্যা : গ্রাম- ১৮১টি ও পাড়া-১২০টি (সরকার কর্তৃক স্বীকৃত) ।
ঘ) বসবাসকারী পরিবার/খানার সংখ্যা : ৮০৪০ টি ।
৮) জন সংখ্যা বিষয়ক তথ্যাদি ঃ
ক) মোট জন সংখ্যা :৫৯,২৭৭ জন । তন্মধ্যে পুরম্নষ-৩০,২৯৫ এবং মহিলা-২৮,৯৮২জন।
খ) জনসংখ্যার ঘনত্ব (প্রতি বর্গকিঃমিঃ) : ১৭৪.৭০ জন
গ) ইউনিয়ন ভিত্তিক জনসংখ্যা : ১) বেতবুনিয়া ইউনিয়ন : ১৬,৮৫৯ জন।
২) ফটিকছড়ি ইউনিয়ন : ৫,৩৬৭ ’’
৩) ঘাগড়া ইউনিয়ন : ২২,৮৪৭ ’’
৪) কলমপতি ইউনিয়ন : ১৪,২০৪ ’’
মোট = : ৫৯,২৭৭ জন।
০৯) শিক্ষা সংক্রাত্ম তথ্য :
ক) মহাবিদ্যালয়- ০৩টি
১. কাউখালী মহাবিদ্যালয়,
২. ঘাগড়া মহাবিদ্যালয় ও
৩.সৃজনী ট্রাস্ট স্কুল এন্ড কলেজ।
খ) বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়: ০৯টি
১.পোয়াপাড়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয়,
২.কাউখালী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,
৩.বেতবুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়,
৪.ডাবুয়া বৃক্ষভানুপুর উচ্চ বিদ্যালয়,
৫.ঘাগড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়,
৬.ঘাগড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,
৭.হারাঙ্গীপাড়া উচচ বিদ্যালয়
৮.পানছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ও
৯.সৃজনী ট্রাস্ট স্কুল এন্ড কলেজ।
ঘ) বেসরকারী নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়:০৫টি
১.নাইল্যাছড়ি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়,
২.কাঁশখালী নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়,
৩.তারাবনিয়া নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়,
৪.তালুকদারপাড়া নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়, ও
৫.উত্তর মুবাছড়ি নিমণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়।
ঙ) সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়: ৩৫ (পঁয়ত্রিশ) টি।
চ) বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়:২১ (একুশ) টি।
ছ) কিন্ডার গার্টেন : ০৩ (তিন) টি(
১.কাউখালী আইডিয়াল কেজি স্কুল,
২.ঘাগড়া কিন্ডার গার্টেন ও
৩.পিএসটিএস কিন্ডার গার্টেন।
জ) মাদ্রাসা (দাখিল): ০৩ (তিন) টি
১.ছিদ্দিক-ই আকবর (রাঃ) দাখিল মাদ্রাসা,
২.বেতবুনিয়া মুঈনূল উলুম রেজভিয়া সাঈদিয়া মাদ্রাসা ও
৩.বেতবুনিয়া গাউছিয়া আহমদিয়া রহমানিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসা।
ঝ) এবতেদায়ী মাদ্রাসা: ০৪ (চার) টি
১.ছিদ্দিক ই আকবর(রাঃ) এবতেদায়ী /দাখিল মাদ্রাসা
২.বেতবুনিয়া মঈনুল উলুম রেজভীয়া সাঈদীয়া এবতেদায়ী /দাখিল মাদ্রাসা
৩.বেতবুনিয়া গাউছিয়া আহমদিয়া রহমানিয়া সুন্নিয়া এবতেদায়ী/দাখিল মাদ্রাসা
৪.ঘাগড়া এবতেদায়ী মাদ্রাসা।
ঞ) শিক্ষারজন্য খাদ্য কর্মসূচীর আওতায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যাঃ ৫৫টি ।
১০) ধমীয় প্রতিষ্ঠান সংক্রামত্ম তথ্যঃ
ক) মসজিদ- ৪২টি
খ) কেয়াং- ১২৭টি
গ) মন্দির- ০৪টি।
ঘ) গির্জা- নাই।
ঙ) ঈদগাহ- ০২টি।
চ) বন বিহার- ০১ টি
১১) স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক তথ্যঃ
ক) হাসপাতালের সংখ্যা-০১(এক) টি
খ) উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র - ০২(দুই) টি ।
গ) পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র-০১(এক) টি
ঘ) কমিউনিটি ক্লিনিক -০৩(তিন) টি।
ঘ) হাসপাতালে বেডের সংখ্যা-১০(দশ) টি।
১২) ভূমি সংক্রামত্ম তথ্যঃ
ক) মোট ভূমির পরিমাণ- ৮৩,৮৪০ একর ।
খ) কৃষি ভূমির পরিমাণ-৮,৪৮০ একর।
গ) হ্রদ এলাকাু- নাই।
ঘ) বনভূমির পরিমাণ - ৬০,০০০ একর।
ঙ) অনাবাদি আবাদযোগ্যভূমি- ৭২৫ একর ।
চ) পতিত ভূমি- ৭৭১ একর।
ছ) সেচের আওতায় কৃষি ভূমির পরিমাণ- ১,৫৮৭ একর।
জ) জলে ভাসা ভূমির পরিমাণ- নাই।
১৩) কৃষি বিষয়ক তথ্যঃ
ক) মোট ফসলী জমির পরিমাণ- ৮,৪৮০ একর।
· এক ফসলী জমির পরিমাণ- ৪,৫৩৭ একর
· দু‘ফসলী জমির পরিমাণ- ১,৬৮০ একর।
খ) সেচের আওতায় ফসলী জমি- ৫২০ হেক্টর।
গ) কৃষি বস্নকের সংখ্যা- ১৫টি ।
ঘ) পাওয়ার পাম্প- ৪৪টি।
ঙ) পাওয়ার টিলার- .....টি
চ) সেচ স্কীমের সংখ্যা- ১১টি।
ছ) ভূমিহীন কৃষকের সংখ্যা- ১৪,১৩৬ জন।
১৪) খাদ্য সংক্রামত্ম তথ্যঃ
ক) মোট খাদ্য উৎপাদনের পরিমাণ- ৫,৫৪০ মেঃ টন।
খ) মোট খাদ্যের চাহিদাু ৭,৭৪০ মেঃ টন।
গ) খাদ্য উদ্বৃত্তের পরিমাণ- নাই।
ঘ) খাদ্য গুদামের সংখ্যা- ০১ (এক)টি।
ঙ) খাদ্যগুদামের ধারণ ক্ষমতা-৫০০ মেঃ টন।
১৫) জনস্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্যঃ
ক) টিউবওয়েলের সংখ্যা- ৭৯৬টি।
খ) অকেজো টিউবওয়েলের সংখ্যা-২১৩টি
গ) রিংওয়েলের সংখ্যা- ১২২টি ।
ঘ) স্যানিটারী ল্যাট্রিনের সংখ্যা-১৮০০টি।
১৬)এনজিও বিষয় তথ্যঃ ১৫ (পণের) টি।
ক) ব্র্যাক
খ) ইপসা
গ) সিডিএস
ঘ) সিএইচসিপি
ঙ) আইডিএফ
চ) সাস
ছ) আশা
জ) গ্রামীন শক্তি
ঝ) গ্রীনহিল
ঞ) এইচএসডিও
ট) নওজোয়ান ও আশিকা
ঠ) আরএইচস্টেপ
ড) সিসিডিআর
ঢ) দি লেপ্রোসি মিশন বাংলাদেশ
ণ ) বনশ্রী
১৭) কাউখালী উপজেলার দর্শনীয় ও উলেস্নখযোগ্য স্থাপনা/স্থান সম্পর্কিত তথ্যঃ
ক) বেতবুনিয়া উপগ্রহ ভূ কেন্দ্র ।
খ) পিএসটিএস ( পুলিশ স্পেশাল ট্রেনিং স্কুল) বেতবুনিয়া।
গ) রাঙ্গামাটি ফুড প্রডাক্টস।
ঘ) রাঙ্গামাটি টেক্সটাইল মিলস লিঃ, ঘাগড়া।
ক) বেতবুনিয়া উপগ্রহ ভূ- কেন্দ্রঃ ১৯৭০ সনের ৩ জানুয়ারী তৎকালীন পাকিসত্মানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান, এইচপিকে, বেতবুনিয়া উপগ্রহ ভূ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। পরবর্তীতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৪ জুন ১৯৭৫ সনে বেতবুনিয়া উপগ্রহ ভূ কেন্দ্র উদ্বোধন করেন। বর্তমানে উক্ত কেন্দ্রের মাধ্যমে সৌদি আরব, সিংগাপুর , হংকং, ওমান, পাকিসত্মান, কয়েত, কাতার, বাহরাইন, জাপান, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মুম্বাই অর্থ্যাৎ মোট ১১টি দেশের সাথে টেলিফোন ডাটা কমিউনিকেশন, ফ্যাক্স, টেলেক্স ইত্যাদি আদানপ্রদান করা হয়। প্রায় ৩৫,৯০০ কিঃ মিঃ বা ২২,৩০০ মাইল উর্ধ্বাকাশে অবস্থিত কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে শক্তিশালী এন্টানার দ্বারা বার্তা/তথ্য আদান প্রদানের কাজ সম্পাদিত হয়।
খ) পিএসটিএসঃ ইহা একটি পুলিশ স্পেশাল ট্রেনিং স্কুল। সমগ্রবিশ্বে এধরণের দুটি প্রতিষ্ঠান আছে তার মধ্যে ইহা একটি অন্যটি মালেশিয়ায়। এ প্রতিষ্ঠানটি প্রথমে টেকটিক্যাল জাংগল ওয়ার ফেয়ার নামে পার্বত্য চট্টগ্রামের মহালছড়িতে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮০ সনের পর হতে স্কুলটি পৃথক ভাবে একজন কমান্ড্যান্ট (পুলিশ সুপার) এর নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়ে আসছে। পরবর্তীতে সরকারী নির্দেশে টেকটিক্যাল াংগল ওয়ার ফেয়ার স্কুল নামটি পরিবর্তন করে ‘ পুলিশ স্পেশাল ট্রেনিং স্কুল নামকরণ করা হয়েছে। এ স্কুল হতে জাংগল যুদ্ধের বিভিন্ন কলা কৌশল প্রক্ষিণপ্রাপ্ত দক্ষ প্রশিক্ষক( সহকারী পুলিশ সুপার হতে হাবিলদার পর্যমত্ম) দ্বারা এর জন্ম লগ্ন হতে এপিবিএন, বিভিন্ন জেলা মেট্রোপলিটন, আরআরএফ সহ অন্যান্য ইউনিটের কনষ্টেবল হতে এএসপি পর্যমত্ম প্রত্যেক পদ-মর্যাদার সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়ে থাকে। এখানে চার প্রকারের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। (১) জাংগল ওয়ার ফেয়ার ওরিয়েনটেশন কোর্স (২) বিশেষ জাংগল ওয়ার ফেয়ার কোর্স (৩) মৌলিক জাংগল ওয়ার ফেয়ার কোর্স (৪) ইউনিট প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ কোর্স।
গ) রাঙ্গামাটি ফুড প্রোডাক্টসঃ ১৯৮১ সনে এ প্রতিষ্ঠানটি কাউখালী উপজেলার ডাকবাংলো এলাকায় স্থাপিত হয়। এখানে পাইনাপেল জুস, পাইনাপেল সস্নাইস, পাইনাপেল লিচু , পাইনাপেল জেম, টমাটোজুস, টমাটো ক্যাচাপ, ম্যাংগো জুস, অরেঞ্জ জুস এবং বিভিন্ন পানীয় তৈরি করা হয়।
ঘ) রাঙ্গামাটি টেক্সটাইল মিলঃ বিটিএমসি কর্তৃক পরিচালিত ১৯৮৩ সালের জানুয়ারী মাসে এ মিলটি চালু করা হয়। এখানে সাদা তুলা হতে সাদা সুতা উৎপাদন করাহয়। এর উৎপাদন ক্ষমতা প্রতিমাসে প্রায় ৩৯০ বেল সুতা। বর্তমানে এটি বন্ধ আছে।
উপজেলা পরিষদ সংক্রামত্ম তথ্যঃ সরকার কর্তৃক ঘোষিত জনপ্রতিনিধিগণ উক্ত উপজেলা পরিষদের সদস্য। উপজেলা পরিষদে হসত্মামত্মরিত বিভাগ সমূহের কর্মকর্তা ও পরিষদের সদস্যগণের সমন্বয়ে্প্রতিমাসে একবার পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা চেয়ারম্যান উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন। উপজেলা পরিষদের খাত ০২টি একটি উন্নয়ন খাত এবং অন্যটি রাজস্ব খাত। প্রতিবছর এডিপি খাতে সরকার হতে একটি নিদ্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়। উক্ত বরাদ্দ হতে কোন খাতে কত টাকা ব্যয় করা হবে তা মাসিক সভায় সিদ্ধামত্ম নেয়া হয়। উক্ত বরাদ্দ থেকে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাসত্মবায়ন করা হয়। সরকারী অফিস/বাসা এবং বিবিধ আয় থেকে রাজস্ব খাতের আয় আসে। উপজেলা পরিষদের মাসিক সভার সিদ্ধামত্ম এবং সরকারী নীতিমালা মোতাবেক উক্ত অর্থ ব্যয় করা হয়।
উপজেলা পরিষদে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি সংক্রামত্ম তথ্যঃ
ক) চেয়ারম্যান
খ) ভাইস চেয়ারম্যান
গ) মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান।
১৯)পুরাতন পরিষদ চেয়ারম্যানগণ ঃ
ক) জনাব তুষার কামিত্ম দেওয়ান
খ) জনাব অংচাপ্রম্ন মারমা।
২০) উপজেলা পরিষদের কর্মচারী সংক্রামত্ম ঃ
ক) সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর ১ জন
খ) জীপ চালক ১জন
গ) এমএলএসএস ২ জন।
২১) উপজেলা প্রশাসনঃ
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের কর্মচারী সংক্রামত্ম তথ্যঃ
উপজেলা নির্বাহী অফিসার - ১জন,
অফিস সুপার - ১জন,
সিএকাম ইউডিএ - ১জন,
সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর -১জন,
অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক -২জন,
সার্টিফিকেট সহকারী - ১জন,
জারী কারক - ২জন,
দপ্তরী - ১জন
এমএলএসএস - ২জন,
নৈশ প্রহরী - ৩জন,
জীপ চালক - ১জন,
ঝাড়ুদার - ২জন।
২২) উপজেলা প্রশাসন হতে যে সকল সেবা প্রদান করা হয় তার বিবরণঃ
1) উপজেলার সার্বিক আইন শৃংখলা রক্ষাকরা।
2) উপজেলার সার্বিক উন্নয়নমূলক কাজ তদারকী ও সমন্বয় সাধন।
3) প্রাকৃতিক দুূর্যোগকালীন সময়ে ক্ষতিগ্রসত্মদের সহযোগিতা প্রদান ও ত্রাণ বিতরণ।
4) ভোক্তাঅধিকার,বিশুদ্ধখাদ্য, সঠিক পরিমাপও পরিবেশ সংক্রামত্ম ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা।
5) নারী, শিশু নির্যাতন ও বাল্যবিবাহ নিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ।
6) মৌজা হেডম্যানদের মাধ্যমে খাজনা (ভূমি উন্নয়ন কর) আদায়।
7) সার্টিফিকেট মামলা পরিচালনা ।
8) উপজেলার বিভিন্ন বিভাগের কাজের মধ্যে সমন্বয় সাধন।
9) উপজেলার স্যানিটেশন কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদান ।
10) জেলা প্রশাসক মহোদয়ের পক্ষউপজেলার আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নবায়ন।
11) হেডম্যান ও কার্বারীদের সম্মানী ভাতা প্রদান।
12) ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্য ও সদস্যাদের সম্মানী ভাতা প্রদান।
13) জেলার স্থায়ী বাসিন্দা/উত্তরাধিকার সদনপত্রের আবেদন অগ্রবর্তীকরণ।
14) বন্ধকী দলিল রেজিস্ট্রেশন।
15) উপজেলার শিক্ষার মান উন্নয়নে সংশিস্নষ্ট বিভাগকে সহযোগিতা প্রদান ও শিক্ষপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন।
16) উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার মাধ্যমে খেলাধূলার মান উন্নয়ন।
২৩) উপজেলার তথা পার্বত্য জেলার ভূমি ব্যবস্থাপনা সংক্রামত্ম তথ্য ঃ
ক) ভূমি উন্নয়ন কর সংক্রামত্মঃ পার্বত্য জেলায় সমতল ভূমির মত ২৫ বিঘা পর্যমত্ম খাজনা মওকুফের বিধান নাই।
১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম এ্যাক্ট অনুযায়ী স্থানীয় রাজা, হেডম্যান ও কার্বারীগণ ভূমি রাজস্ব (খাজনা) আদায় করে থাকেন।
· ১ম শ্রেণীর ভূমিঃ একর প্রতি খাজনা - ৩.০০ টাকা
উন্নয়ন কর - ১.৫০ টাকা
স্থানীয় কর - ০.৭৫ টাকা
মোট - ৫.২৫ টাকা
· ২য় শ্রেণীর জমি বা উচু সমতল কিন্তু পাহাড় নহে এ জাতীয় জমিঃ- একর প্রতি- খাজনা ঃ ২.০০ টাকা
উন্নয়ন কর - ঃ ১.০০ টাকা
স্থানীয় কর - ঃ ০.৫০ টাকা
মোট- ঃ ৩.৫০ টাকা
· ৩য় শ্রেণীর জমি বা পাহাড় জমি ঃ- একর প্রতি- খাজনা ঃ ১.০০ টাকা
উন্নয়ন কর - ঃ ০.৫০ টাকা
স্থানীয় কর - ঃ ০.২৫ টাকা
মোট - ঃ ১.৭৫ টাকা
· জুম খাজনা ঃ- জুম খাজনা সরাসরি হেডম্যানগণ আদায় করে থাকেন। খাজনা একর প্রতি৬.০০ টাকা মাত্র।
· ফ্রিজল্যান্ড/জলে ভাসা জমিঃ- জলে ভাসা জমি সাধারণত একবছরের জন্য লীজ প্রদান করা হয়। খাজনা আদায় করে থাকেন হেডম্যান এবং একর প্রতি খাজনা ৬.০০ টাকা মাত্র।
ভূমি উন্নয়ন করের হিস্যা( কে কত অংশ ভূমি উন্নয়ন কর পায়) বিবরণঃ১ম শ্রেণীর জমির উন্নয়ন কর সরকার পায়। তবে সমেত্মাষজনক আদায় থাকলে হেডম্যানগণকে জেলা প্রশাসক মহোদয় আদায়ের উপর একটি কমিশন প্রদান করেন। খাজনা আদায়ের জন্য দাখিলা প্রদান করেন ইউএনও ও এসি ( ল্যান্ড) এবং ২য় ও ৩য় শ্রেণীর জমি তথা গ্রোভল্যান্ড ভূমির দাখিলা প্রদান করেন রাজা। গ্রোভল্যন্ড জমির আদায়কৃত খাজনার উপর ৪২% পায় রাজা, ৩৭% পায় হেডম্যান এবং ২১% পায় সরকার।
ক) ভূমি বন্দোবসত্ম প্রদান সংক্রামত্ম ঃ জেলার কোন স্থায়ী নাগরিক জেলা প্রশাসক বরাবরে সাদা কাগজে আবেদন করেন। উপজাতীয়দের ক্ষেত্রে কোট ফি ছাড়া এবং অ-উ্পজাতীয়দের ক্ষেত্রে ১টাকা কোট ফি দিয়ে আবেদন করতে হয়। অতঃপর জেলা প্রশাসক মহোদয় তার আবেদন পত্র খানা স্থানীয় হেডম্যানদের রির্পোট এবং কানুনগো কর্তৃক জায়গার স্কেচ ম্যাপসহ যাছাই করে কেস সৃজন করা হয়। পার্বত্য জেলা সমূহের উপজেলা সমূহে কোন যাচাই-বাছাই কমিটি নেই। বর্তমানে পার্বত্য জেলা সমূহে কোন জায়গা বন্দোবসত্ম প্রদান করা হয় না।
খ)মিউটেশন সংক্রামত্মঃ জমি বেচা কেনা সংক্রামত্ম যে কোন কাজ জেলা প্রশাসক করে থাকেন। জেলার কোন স্থায়ী নাগরিক কোন ব্যক্তি বা কোন প্রতিষ্ঠান কোন জমি ক্রয় করার ইচ্ছা পোষণ করলে জেলা প্রশাসক মহোদয় বরাবরে একটি আবেদন করতে হয়। জেলা প্রশাসক মহোদয় জমি হাত বদলের জন্য ১৯৯৮ সালে শামিত্ম চুক্তি অনুযায়ী জেলা পরিষদের সম্মতি সাপেক্ষে জমি মিউটেশন করে থাকেন।
M)জমি রেজিষ্ট্রেশন সংক্রামত্মঃ পার্বত্য চট্টগ্রাম এ্যাক্ট ১৯০০ অনুযায়ী জেলা প্রশাসক জেলা রেজিষ্টারের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। জেলা প্রশাসক তার অধীনসত্ম একজন কর্মকর্তা দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন কাজ সম্পন্ন করে থাকেন। রেজিষ্ট্রেশন ফি মাত্র ০.৫০ টাকা মাত্র। এখানে কোন জুডিশিয়াল ষ্টাম্পের প্রয়োজন নাই। সাধারণ কার্টিজ পেপারে জমি বেচা-কেনার কাজ করা যায়। এ ছাড়া অন্যান্য কার্যক্রম সমতল ভূমির মত।
N)জলমহাল ব্যবস্থাপনাঃ ২০বছর উর্ধ্বের জলমহাল গুলো কালেক্টর কর্তৃক লীজ প্রদান করা হয়ে থাকে। ২০ বছরের নিমেণর জলমহাল গুলো বেকার যুব সংগঠন অথবা মৎস্যজীবি জেলেদের নিকট লীজ দেয়ার বিধান রয়েছে। দারিদ্র বিমোচনের জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যুবকদের নিকট এই জলমহাল গুলো বন্দোবসত্ম দেয়া হয়ে থাকে। এ সংক্রামত্ম উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এই কমিটির সভাপতি।
ঙ) হেডম্যান এবং কার্বারী সংক্রামত্ম : ভূমি উনণয়ন কর আদায়ের প্রধান সহযোগী হেডম্যান এবং কার্বারীগণ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং রাজা কর্তৃক সুপারিশের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক মহোদয় নিয়োগ প্রদান করে থাকেন। এই উপজেলায় বর্তমানে ১০টি মৌজায় ১০ জন হেডম্যান এবং ১২০ টি পাড়ার জন্য ১২০ জন কার্বারী আছেন। হেডম্যান/ কার্বারীগণের কাজ অনেকটা সমতল ভূমির তহশিলদারদের মত। হেডম্যান এবং কার্বারীগণ বিভিন্ন সরকারী কাজে সহায়তা প্রদান করে থাকেন। প্রতিমাসে হেডম্যানকে ৩০০/- টাকা হারে সম্মানী ভাতা এবং কার্বারীগণকে প্রতিমাসে ২০০/- টাকা হারে সম্মানী ভাতা সরকার প্রদান করে থাকেন।
চ) বাজার ফান্ড: জেলার হাট-বাজার সমূহ পার্বত্য জেলা পরিষদ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয়। জেলা পরিষদ বন্দোবসত্ম হাট- বাজারের ক্যালেন্ডার তৈরি করে ১লা বৈশাখ থেকে ৩০ চৈত্র পর্যমত্ম এক বছরের জন্য লীজ প্রদান করে থাকেন। আয় ব্যয় জেলা পরিষদ নিয়ন্ত্রণ করেন। ইউনিয়ন পরিষদ সমূহ উক্ত আয়ের একটি অংশ পায়।
24)উপজেলার অন্যান্য তথ্যঃ
ক) পুলিশ ষ্টেশন- ১টি
খ) পুলিশ ফাঁড়ি- ১টি
গ) পুলিশ ক্যাম্প- ১টি
ঘ) আনসার ব্যাটালিয়ন- ১টি
ঙ) টেলিফোন একচেঞ্জ ১টি
চ) ডাকঘর- ৩টি
ছ) বাজার- ৪টি
জ) স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স ১টি
ঝ) স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র ২টি
ঞ) পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ১টি
ট) কমিউনিটি ক্লিনিক ৩টি
ঠ) ব্যাংক ৩টি
ড) বিদ্যুৎবিতরণ কেন্দ্র ১টি
ঢ) হেলিপ্যাড ১টি
ণ) সিনেমা হল ২টি ( বর্তমানে বন্ধ রয়েছে) ।
ত) ডাক বাংলো ৩টি (২টি পরিত্যক্ত) ।
থ) মিনি(মৎস্য) হ্যাচারী ১টি।
(মোঃ মোতাহার হোসেন)
উপজেলা নির্বাহী অফিসার
কাউখালী
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS